স্মৃতির পাতায় বন্দি হয়ে থাকবে শুধুমাএ

avatar

IMG_20200704_215129.jpg
গত ঈদের ছুটিতে আমি আমার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেলাম। অবশ্য পরিবারের সবাই একসাথেই গিয়েছিলাম।এক নতুন ভ্রমণের আনন্দ আর বন্ধুদের ভালোবাসা পেলাম যা কোনদিন ভুলতে পারবো না।
থাকি বাবা,মা এর সাথে ঢাকা শহরে।আর আমাদের গ্রামের বাসা জয়পুরহাট জেলায়।বাবা চাকরি করেন আর মা স্কুলের টিচার।আমি সবে মাত্র কলেজে পা দিয়েছি তাই সব মিলিয়ে অনেকদিন গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয় না।তাই গত ঈদের ছুটিতে আমরা সবাই গ্রামের বাড়িতে গেলাম ছুটি কাটাতে।
ঠিক ঈদের পরেরদিন আমি ও আমার বন্ধুরা বেড়াতে যাবো।কিন্তু কোথায় যাওয়া হবে সেটা ঠিক করতে পারছি না।আগেই বলে রাখি আমি,রাজন,রকি আর সাকিব খুব ভালো বন্ধু।সবাই একসাথে থাকা হয় না।কিন্তু সবার প্রতি সবার ভালোবাসার রয়েছে অবিরাম।
আমি রাজন কে বললাম কোথায় যাওয়া যাবে?রাজন বলল ওর বাইক আছে বাইক নিয়ে নতুন কোথাও যাবে।কিন্তু রকি বাইকে চড়তে খুব ভয় পায়।তাই রকি রাজি না।
সব শেষে সবাই ঠিক করলাম যে রাজনের বাইক নিয়েই বেড়াতে যাবো।রকিও রাজি হয়ে গেল।এক বাইকে আমি আর রাজন।
আর এক বাইকে রকি আর সাকিব।বাইক গুলো খুব ধির গতিতে চলছে পাশাপাশি দুটো বাইক।
IMG_20200704_215037.jpg
আমরা সবাই প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে লাগলাম।রাজন-চলো সবাই সামনেই একটা বাজার নেমে চা খাবো।
রকি- হ্যাঁ যাওয়া যায়।
আমিও রাজি হয়ে গেলাম।
বাজারে নেমে এক নতুন কাকার সাথে পরিচিত হলাম।চায়ের বিল টা আমাদের কে দিতে হল না।কাকাই চায়ের বিল দিল।
আমরা একটু রেস্ট নিয়ে আবার যাত্রা শুরু করলাম।কিছু দুর যাওয়ার পর রাস্তার পাশেই একটা বিশাল আকারের পুকুর দেখতে পেলাম।
আমরা সবাই পুকুর পারে বসে থেকে অনেক গল্প করলাম।বেলা তখন ১১ টার কাছাকাছি হবে।
রাজন-চলো এই বার পাশের গ্রামে একটা ঘন জঙ্গল আছে সেখানে প্রাকৃতিক দৃশ্য অনেক সুন্দর।
আমি-তাহলে দেরি করে কি লাভ??
সাকিব- হ্যাঁ চলো সবাই।
যেতে যেতে মাঝ পথে একটা হোটেল থেকে কিছু খাবার কিনে নিলাম।
কিছুক্ষণ পরেই আমরা সেই গ্রামের জঙ্গল পৈাঁছে গেলাম।
আমি আগে এই জায়গায় এসেছি,
কিন্তু এখন যেন অন্য রকম লাগছে।বাইক থেকে সবাই নেমে পাশে একটা ছোট পুকুর পারে গিয়ে বসে পরলাম।পুকুর পার থেকে জঙ্গল টা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।
রাজন বলল যে ওর খিদে পেয়েছে।
সাকিব-খাবার তো আছে কিন্তু পানি পাবো কোথায়?
আমি,আর রকি একটু হেঁটে সামনের দিকে গেলাম।একটা বাড়িতে গিয়ে একটু পানি নিলাম।
বাড়ির মানুষগুলো অনেক ভালো।আমাদের কে বসতে দিল।আবার খাবার খেতে দিল।
কিন্তু ওদিকে সাকিব আর রাজন বসে আছে তাই আমরা আর দেরি করলাম নাহ।কিন্তু বাড়ির মানুষগুলো আমাদের কে না খেয়ে যেতে দিচ্ছে নাহ।
আমার খুব ভালো লাগলো।নিজের মুখে নিজের এলাকার মানুষের কথা আর নাইবা বলি।
সত্যি আমাদের এলাকার প্রাকৃতিক দৃশ্য যেমন সুন্দর ঠিক তেমনি গ্রামের মানুষগুলো ও খুব সুন্দর।
আমি আর রকি ফিরে গেলাম।তখন বেলা ১ঃ৩০ এর মতো।সবাই খেয়ে নিলাম।
সবাই মিলে একটু রেস্ট নিয়ে জঙ্গল প্রাকৃতিক দৃশ্য আর মনোরম পরিবেশ উপভোগ করতে লাগলাম।
রাজন-চলে সবাই একটু জঙ্গলের ভিতরে যাওয়া যাক।
রকি-সুনেছি ওখানে নাকি বিষাক্ত সাপ থাকে??
সাকিব-আরে না ওসব ভুয়া।
আমি-চলো একটু যেয়ে দেখি।
সামনে একটু এগিয়ে যেতেই ঘন জঙ্গল আর পাখির কিচিরমিচির শব্দ যেন কানে ধেয়ে আসতে লাগলো।
আমি খুব কোতুহল এর সহিত সব কিছু উপভোগ করতে লাগলাম।
রাজন-বেশি ভিতরে যাওয়া ঠিক না।
সাকিব-কিছু হবে না এসেছি যখন আর একটু যাই না??
আমিও যাচ্ছি।
হঠাৎ লক্ষ্য করে দেখি সামনে একটা সুন্দর পাখি বসে আছে।আমি এগিয়ে যেতে লক্ষ্য করলাম যে পাখিটি উড়তে পারছে না।আমি রাজন,আর সাকিব কে বললাম।
সবাই মিলে এগিয়ে গিয়ে পাখিটিকে ধরে পুকুরের পাশের নিয়ে গেলাম।দেখলাম যে পাখিটার পাখাতে আঘাত লেগেছে।পাখিটাকে একটা গাছের ডালের উপরের রেখে দিয়ে আমরা আবার সামনে চলতে থাকলাম।
পাখিটির একটা ছবি তুলে রাখলাম।জঙ্গলের পরিবেশ খানিকটা উপভোগ করে আবার আমরা পুকুর পারে আসলাম।পুকুর পারে বসে থেকে অনেক গল্প করলাম সবাই।বেলা তখন ৩ টা এর মতো।
অবশেষে আমি বললাম যে চলো সবাই এখন যাওয়া যাক??সাকিব বলল যে ঠিকাছে।
আবার বাইক নিয়ে রওনা দিব তখন দেখতে পেলাম যে গ্রামের কিছু ছোট ছেলে মেয়ে পুকুরে এসেছে গোছল করতে।আমি ওদের সবার সাথে ছবি তুলে নিলাম।
সামনেই দেখি যে অনেক মানুষ কৃষি জমিতে কাজ করছে আর বাউল গান গাইছে।আহা কি সেই দৃশ্য। মনটা বলছে যেন এখানেই থেকে যাই।এখান থেকে আর যেতে ইচ্ছা হচ্ছে না।
কি আর করার যেতে তো হবেই।
সবশেষে রওনা দিলাম বাড়ির পথে।
বিকাল ৫ টার দিকে বাড়িতে পৈাঁছালাম।
তখনকার মতো যে যার বাড়িতে চলে গেলাম।
এই ভ্রমনটি খুব ছোট পরিসরের হলেও সারাজীবন মনে রাখার মতো।
বন্ধুদের ভালোবাসা আর প্রাকৃতিক পরিবেশ যেন মনোমুগ্ধকর।
সব মিলিয়ে ভ্রমনটা অসাধারণ ছিল যা বর্ননা করা সম্ভব না।
ধন্যবাদ সবাইকে।
নিজে ভালো থাকবেন।
অপরকে ভালো রাখবেন।
x7L2VSNEiyAB5Ux7nxKmLo6yLyEJT6Jt5yhNCUpGMZw62Y4pMSCJDENNxym1pJNL9Hpdt3Fg4fpUTt9.gif



0
0
0.000
0 comments